শুক্রবার ১৩ই আশ্বিন ১৪৩০ Friday 29th September 2023

শুক্রবার ১৩ই আশ্বিন ১৪৩০

Friday 29th September 2023

প্রচ্ছদ প্রতিবেদন

ঋণের বোঝা শিশুর কাঁধে

২০২২-১০-১৪

দৃকনিউজ প্রতিবেদন

      

নিউ মার্কেট এলাকায় সাদ্দামের সাথে আমাদের দেখা হয় রাত এগারোটায়…

 

দাদি আদর করে তাকে সাদ্দাম বলে ডাকেন, ভালো নাম মোহাম্মদ তামিম। ২৮ পারা কোরআন পড়ে মাদ্রাসা ছেড়েছে সে। স্কুলের শাসন তার ভাল লাগতো না, খেলাধূলা নিয়ে মেতে থাকাই ছিল তার পছন্দের।

 

সেই সাদ্দামকে বয়স ১০ হওয়ার আগেই স্কুল, বই, খেলা সব ছেড়ে ঢাকার রাজপথে নামতে হল। ঢাকায় আখের রস বিক্রি করে সে। শুধু বিক্রিবাট্টা আর খদ্দের সামলানো নয়, আরও কঠিন সব কাজও করতে হয় তাকে। পুলিশ, লাইনম্যান, ফাও খাবার লোক সামলানো, মাল কেনা-বেচা সবই দেখতে হয় দশ বছরের সাদ্দামকে।

 

সকাল ৮ টায় ঘর থেকে বের হয় সাদ্দাম। সারাদিন নিউমার্কেট এলাকায় আখের বিক্রি করে ফিরতে ফিরতে রাত ১২ টা বা ১ টা। সপ্তাহে একদিন, মঙ্গলবার সাদ্দামের ছুটি। সেদিন ঘর থেকে একছুটে বুদ্ধিজীবী মাঠে চলে যায় সে। সাদ্দামের বাবার একটা হাঁসের খামার ছিলো। মড়কে সব হাঁস মরে গেলে প্রায় ১০ লাখ টাকা ঋণগ্রস্থ হন তার বাবা।

 

তাই ভোলার গ্রামের বাড়ি ছেড়ে পরিবারটি একরকম পালিয়ে ঢাকায় চলে আসে। গ্রামীণ স্বচ্ছল জীবন থেকে তাদের ঠাই হয় বেড়িবাঁধের বস্তিতে। পড়াশোনা বন্ধ করে বাবার সাথে দুই ভাই নেমে যায় আখের রসের ব্যবসায়।

 

সাদ্দামের বাবা রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের পাশে সারারাত আখ ছোলার কাজ করে সকালে ঘুমাতে যান। সাদ্দামদের তিনটি আখের রস বিক্রির গাড়ি আছে। সেগুলোর আয়েই চলে তাদের সংসার এবং দেনা শোধ।

 

গ্রাম থেকে পাওনাদার প্রতিদিন ফোন দিয়ে তাগাদা দেয়। মোহাম্মদ তামিম ওরফে সাদ্দাম হোসেন স্বপ্ন দেখে, বাবার ঋণের টাকা শোধ হলে একদিন আবারও তারা সবাই মিলে গ্রামে ফিরে যাবে।

Your Comment